Kon Tiki - সিনেমার পুরো গল্পটির বাংলা অনুবাদ || বাংলায়  এই সিনেমার পুরো গল্পটা পড়ুন খুব সহজেই || Bangla Story 


Bangla short motivational stories
Bangla short motivational stories 

-আজকের এই গল্পটা একটি সত্য ঘটনা। যা পুরোপুরি ভাবে ইতিহাস বদলে দিয়েছিল। এবং তার সাথে সাথে এক নতুন ইতিহাস রচনা করেছিল।
-এই কাহিনি আমাদের শেখায় যে, যদি আমাদের মনে সাহস থাকে! - তাহলে আমরা সেই কাজে সফল হয়েই যাই! - যেটা আমরা মন থেকে করতে চাই।

- এই কাহিনীর শুরু হয়  " থর হেডরেল"  নামের একটি ছেলেকে দিয়ে। থর একজন অ্যাডনোগ্রাফার ও অ্যাডভেঞ্চারার। 
- থর বড়ো হওয়ার পর থেকেই পলিনেশিয়ার দ্বীপে থাকতে শুরু করে। পলিনেশিয়া এমন একটা জায়গা, যেখানেব হাজারো দ্বীপ আছে। এদের মধ্যে কিছু দ্বীপ আলাদা দেশ হিসেবে রয়েছে। আর বেশিরভাগ দ্বীপের মধ্যেই বাইরের দেশ তাদের আধিপত্য বজায় রেখেছে। 
- থর এসব দ্বীপের মধ্যেই তার জীবনকে বেছে নিয়েছে। থর এখন এখানকার লোকজনের জীবন নিয়ে তাদের সম্পর্কে গবেষণা করে। সে দিনের পর দিন এদের সাথে কাটিয়েছে। যার জন্য থর এখন এদের জীবন সম্পর্কে অনেক কিছুই জানে। 
- কিন্তু একদিন যখন এখানকার একজন বৃদ্ধ আদিবাসীকে জিগ্গেস করে যে তারা আসলে কোথায় থেকে এই দ্বীপে এসেছে?

- থরের কথায় সেই বৃদ্ধ তাকে বলে যে - তাদের পূর্বপুরুষেরা পূর্ব থেকে এসেছিল। 
- কারণ তাদের পূর্বপুরুষদের মতে পূর্ব থেকেই সূর্য ওঠে! - এবং সেদিক থেকেই সমস্ত শক্তি তৈরী হয়েছে! - তাই তাদের পূর্বপুরুষেরাও পূর্ব থেকেই এসেছিল।

- থর সেই বৃদ্ধের কথা শুনে অবাক হয়ে যায়। কারণ সবার মতে,বা এতদিন থেকে সবাই যেটা জেনে আসছে, সেটা হল পলিনেশিয়ার দ্বীপে যত আদিবাসী বাস করে, - তাদের পূর্বপুরুষেরা এশিয়া থেকে এসেছিল!, কিন্তু সেই বৃদ্ধের মতে তাদের পূর্বপুরুষেরা এশিয়া নয়, বরং তারা এসেছিল পূর্ব অর্থাৎ সাউথ আমেরিকা থেকে এসেছিল। 
- সেই বৃদ্ধ থরকে একটি বহু পুরোনো মূর্তি দেখায়, যা হল সূর্য দেবের। অর্থাৎ এর মানে দাড়ায় এটাই যে এই বৃদ্ধের পূর্বপুরুষেরা পূর্ব দিক থেকে এসেছিল। তাই এরা সূর্য দেবতার মূর্তি বানিয়েছিল।

- থর এসব দেখে এবং  সেই বৃদ্ধের কথা শুনে ভাবতে বাধ্য হয়, যে আসল সত্যিটা কি?
-  সেটাই যেটা কি? - যেটা পুরো দুনিয়া জেনে আসছে..
-  নাকি সেটাই- যেটা সেই বৃদ্ধ থরকে বলেছিল।

-  থর এখানে  এসবের জন্য আরও দশ বছর এই দ্বীপে কাটায়। আর সে এই দশ বছর ও তার আগেও অভিজ্ঞতা নিয়ে অনেক গুলি Theory লেখে। এবং এরপর থর 1946 খ্রিষ্টাব্দে নিউইয়র্ক ফিরে আসে।

-  এরপর 1946 খ্রিষ্টাব্দে থর এই Theory গুলি নিয়ে একজন পাবলিশারের কাছে যায়। 
-  থর চেয়েছিল যে তার এই Theory গুলি যেন প্রকাশ করা হয়। যেখানে বলা পলিনেশিয়ার আদিবাসীদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, আর এও বলা হয়েছে যে তারা আসলে এশিয়া নয়! বরং সাউথ আমেরিকা থেকে এসেছিল! 
-  কিন্তু সেই পাবলিশার থরের এই Theory গুলো নিয়ে মজা করতে থাকে। আর থরকে উল্টাপাল্টা শোনায়। সে বলে যে - তোমার মতে পলিনেশিয়ার আদিবাসীরা সাউথ আমেরিকা থেকে এসেছিল.. 
-  1500 বছর আগে এরকম কোনো আধুনিক টেকনোলজি ছিলই না যে তারা এত বড়ো সমুদ্র পাড়ি দিয়ে পলিনেশিয়া আসবে।

-  থর সেই পাবলিশারকে বলে - তারা ভেলায় করে এসেছিল! 
-  এতে সেই পাবলিশার আরও হেসে ওঠে। 
-  এরপর সেই পাবলিশার থরকে বলে যে," যদি তোমার তাই মনে হয়, তাহলে তুমি নিজে সেইটা প্রমান করে দেখাও। তুমি নিজে ভেলায় করে  পেরু থেকে পলিনেশিয়া যাও। যদি তুমি এটা করতে পারো তাহলে আমি তোমার Theory মেনে নেবো। তার সাথে তোমার এই বই ও প্রকাশ করা হবে "

-  থর সেই পাবলিশারের কথা শুনে রেগে যায় । কিন্তু থর এটাও ভেবে দেখে - যদি তাকে তার Theory প্রমান করতে হয়, তাহলে তাকে তাই করতে হবে!, যা এই পাবলিশার বলেছে। 
-  আর থর এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে যায়।

-  থর আসতে আসতে এই জিনিসটা নিয়ে ভাবতে শুরু করে, যে তাকে সেই কাজটা করতেই হবে, যেটা পলিনেশিয়ার আদিবাসীদের পূর্বপুরুষেরা করেছিল।
-  থর তার এই সংকল্পে দৃঢ়ভাবে আটকে পরে। 
-  যে তাকে তার Theory প্রুফ করতেই হবে।

-  থর তার এই সফরের জন্য অনেক জায়গায় সাহায্য চায়। কারণ তার এই সফরের তাদের খাবার ও অন্যান্য জিনিসপত্রের জন্য টাকা দরকার। কিন্তু সেরকম কেউ ই এর জন্য তাকে সাহায্য করতে চায় না। কারণ সবার মতে থর যেটা করতে যাচ্ছে, সেটা সুইসাইডের থেকে কম কিছু না! আর তার জন্য কেউই থরকে টাকা দিতে চাইছে না!

-  থর এই সফরে কোনোভাবেই একা যেতে পারবে না! তার জন্য থর অনেক লোককে তার সাথে যেতে বলে। কিন্তু কেউ ই তার সাথে যেতে রাজি হয়না.. 
-  কারণ সবার ই মনে হয় যে থর যেটা করতে যাচ্ছে, সেটা প্রায় অসম্ভব। আর হতেই পারে যে এটাই থরের শেষ যাএা। 
-  একজন ছেলে থরকে এটাও বলে যে, সে একবার আটলান্টিকে আটকে গিয়েছিল, সে সেখানে 22 দিন বেচে ছিল। কিন্তু থর যেই সফরের কথা বলছে - সেটার কোনো দিনের হিসাব হতে পারেনা। 
-  আর এর কোনো নিশ্চয়তা নেই যে তারা আদতেও বেঁচে ফিরতে পারবে কিনা।

-  থর যখন একটা রেস্টুরেন্টে থেকে বাইরে বেরোয়, তখন একজন লোক আসে,  যার নাম হারমান। 
-  হারমান থরের সেই কথা গুলো শুনে ফেলে যা সে একটি ছেলেকে বলছিল। হারমান থরের এই সফরের কথায় exited হয়ে পরে। 
-  আর হারমান থরের সাথে তার সফরে যেতে রাজি হয়ে যায়। আর থর এই প্রথমবার তার একজন সঙ্গী খুজে পায়! -যে তার সাথ দেবে।

- থর এই যাএার জন্য এতটাই সিরিয়াস হয়ে যায় যে সে  তার সন্তানদের সাথে বড়োদিন ও ত্যাগ করে। থর তার স্ত্রীকে এটা বলে যে তার কাছে এখন এই সফর ই সব। সে তার 10 বছরের কাজকে মিথ্যে হতে দিতে পারবে না! তাই তাকে এটা করতেই হবে।

- এরপর থর হারমানের সাথে পেরু চলে আসে। পেরুতে আসার পর থর ও হারমানের সাথে আরও তিনজন ব্যক্তি যোগদান করে। আসলে তারাও থর ও হারমানের সাথে এই সফরের অংশ হতে চায়। 
- আর এখন থরের সাথে আরও চারজন! অর্থাৎ মোট পাচজন এই সফরের অংশ। 

- এখানে তারা এমন একটি জায়গা আসে,যেখানে অনেকগুলো কাঠের গুড়ি বা টুকরো রাখা আছে। 
- তারা এই কাঠের সাহায্যেই সেই ভেলা বানাবে যার সাহায্য এরা সমুদ্রে পাড়ি দেবে। 
- তারা যেই ভেলাটা বানাবে সেটায় কোনো আধুনিক পদ্ধতি থাকবে না। সেটা হবে আদিম যুগের পদ্ধতিতে বানানো এক সাধারণ ভেলা। যাতে কোনো যান্ত্রিক পদ্ধতি থাকবে না। তা হবে শুধুমাত্র কাঠ ও দড়ির ও পালের ভেলা।  
- থর যদি তার ভেলায় কোনো আধুনিক পদ্ধতির ব্যবহার করে, তাহলে তার theory ভুল প্রমাণিত হবে। কারণ পলিনেশিয়ার আদিবাসীরা যখন 1500 বছর আগে পলিনেশিয়াতে এসেছিল, তখন তাদের ভেলাও সাধারণ ছিল। তাই থরও নিজের ভেলাকে সাধারণ ই রাখতে চায়।

- থর এখানকার একজন ধনী ব্যক্তির সাথে দেখা করে, যে তাদের আর্থিক সাহায্যের জন্য রাজি হয়। 
- আর এই খবরটা খবরের কাগজেও ছাপা হয় যে থ নামের এই ব্যক্তি তার পাচ সাথীর সাথে এক অসম্ভব কে সম্ভব করার চেষ্টা করছে। 
- আর এই খবর পড়ে একজন ফটোগ্রাফার থরের সাথে দেখা করে।  
- সেই ফটোগ্রাফার থরের এই অসম্ভব সফরের সাক্ষী হতে চায়। সে তার ক্যামেরার মধ্যে তাদের এই অসম্ভবকে ধরে রাখতে চায়। আর এরপর তার কথায় থর তাকেও তার সফরের অংশ করে নেয়। 
- এবং সবশেষে মোট ছয়জন ব্যক্তি এই সফরের অংশ হয়ে দাড়ায়।

- এখন থর ও তার দলের সেই সময় চলে আসে, যখন তাদের যাএা শুরু করতে হবে। এরা ছয় জন মিলে এমন একটি ভেলা তৈরি করে, যা খুবই সাধারণ। হয়তো এই ভেলার দড়ি কিছুদিনের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু এরা এতেও কোনো সেফটি নেয় না! এরা নিজেদেরকে  সমুদের বুকে ছেড়ে দেয়। হয়তো এদের সাথে সেটাই হত যেটা সমুদ্র চায়।

- যেদিন এরা ছয়জন তাদের যাএা শুরু করে, সেদিন অনেক লোক এদের এই যাএাকে দেখতে আসে। 
- এর আরও একটা কারণ হল -সবাই এটাই ভাবছিল যে এটাই তাদের শেষ দেখা। 
- এরপর আর কোনোদিন ই এদের দেখা পাওয়া যাবেনা। কারণ এরা যা করতে যাচ্ছে, তা সুইসাইড এর দ্বিতীয় নাম। 
- হয়তো সবার এই ভাবনা টাই স্বাভাবিক। কারণ সত্যি এটাই ছিল! 
- এদের এই সফর থেকে আসার সম্ভাবনা ছিল না বললেই চলে।

- কিন্তু সবাইকে অবাক করে দেয় এদের এই সফর। 
- এরা ছয়জন প্রায় 101 দিনের যাএার পর, পেরু থেকে পলিনেশিয়া পৌঁছে যায়।
- এটা আমি যত সহজে লিখছি বা বলছি, সেটা মোটেই এতটাও সহজ না! 
- এদের যাএা পথে হাজারটা বাধার সম্মুখীন হতে  হয়। কিন্তু এরা সেই সমস্ত বাধাকেই পেরিয়ে আসে। 
- এরা এমন এক অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখায়, যা কেউ কোনোদিন ভাবতেও পারবে না! 
- এটা কোনো অসম্ভব কাজের থেকে কম নয়! কারণ এই ছয়জনের যাএাটা সমুদ্রে ছিল!, আর সমুদ্রে প্রতিটা মুহূর্তে বিপদ লুকিয়ে থাকে।  
- কিন্তু এই ছয়জন সেই সমস্ত বাধাকেই পেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়। 
- এদের সাথে হয়তো ভাগ্য দেবতা সাথে ছিলেন।
- কিন্তু তার থেকেও বেশি বড়ো কথা ছিল এই ছয়জনের সাহস! এদের নিজেদের প্রতি বিশ্বাস! যা এদের এই সফরেও টিকে থাকতে সাহায্যে করেছিল।

- যারা এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছিলেন - তারা হলেন - থর হেডরেল, হারমান ওয়াটজিংগল, কট হিউগল্যান্ড, বেঞ্জ ডেনিলসন, এরিক হেজালবার্গ, টস্টিন র‍্যাবি।
- এরা ছয়জন শুধুমাত্র ইতিহাস রচনা করেননি! তার সাথে এক নতুন ইতিহাস রচনা করেছিলেন। 
- এরা ছয়জন যেই ভেলায় করে তাদের ইতিহাস লিখেছিলেন, সেই ভেলার নাম ছিল "কনটিকি"। যেটি এখন মিউজিয়ামে রাখা আছে। এবং এখনো হাজারো মানুষ এই ভেলার দর্শন করে থাকে।।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন