STALKER
![]() |
| bangla sad stories |
আজকের এই কাহিনি আপনাকে কি শেখাবে তা আমার জানা নেই!
কিন্তু আমি আপনাকে এটাই বলতে চাই যে - যেখানে মানুষের কষ্ট আছে!, সেখানেই মানুষের নতুন কিছু পাওয়ার আশাও আছে।
কষ্ট হল এমন একটা জিনিস! - যা আমাদের জীবনের মানেটা বুঝিয়ে দেয়।
যেখানে আমরা কষ্ট পাই, সেখানেই আমাদের সুখ খোজার মানসিকতা জন্ম নেয়।
কষ্টের মাধ্যমেই একজন প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে পারে।
আর সেই কষ্টের জন্যই জীবনে কিছু করে দেখানোর শক্তি তৈরি হয় ।।
আর আজকের এই কাহিনিতেও তাই বলার চেষ্টা করেছি।
আজকের এই গল্পটি " STALKER " নামক একটি সিনেমার।
যেটা "রোড সাইড পিকনিক " নামক উপন্যাসের ওপর ভিত্তি করে বানানো হয়েছিল।।
-এই কাহিনি হল স্টকার নামের এক ব্যক্তির। যে খুবই গরীব!
- স্টকারের কাছে না আছে টাকা আর না আছে ভালো বাড়ি। সে এতই গরীব যে সে তার পরিবারের জন্য কিছুই করতে পারে না!
- তাকে এক ভয়ংকর কাজ করতে হয়! যেখানে যেকোনো সময় যা কিছু হতে পারে।
- কিন্তু স্টকার তার এই কাজটাই করতে চায়।
- স্টকারের জীবনে কষ্ট ছাড়া আর কিছুই নেই।
- তার একটি মেয়ে আছে। কিন্তু সেই নিস্পাপ মেয়েটিও ঠিকঠাক ভাবে চলতে পারে না।
- স্টকারের কাজ হল এমন কিছু মানুষ, যারা যোন এ যেতে চায়! - তাদেরকে গাইড করা। এবং তাদেরকে সুরক্ষিত ভাবে যোনে পৌঁছে দেওয়া।
- যোন হল এমন একটি যায়গা, - যেখানে যাওয়া সরকারের পক্ষ থেকে যাওয়া একদম নিষেধ।
- যোন হল এমন একটি যায়গা, যেখানে একটি রুম আছে। আর কেউ যদি সেই রুমের ভেতরে গিয়ে তার মনের ইচ্ছে প্রকাশ করে, তাহলে তার মনের ইচ্ছে পূরণ হয়।
- কিন্তু যোনের ভেতরে যাওয়া এতটাও সহজ না। এখানে প্রতি মুহুর্তেই কিছু না কিছু পাল্টাতে থাকে।
- আর এখানে আশা কখনোই সুরক্ষিত না।
- তাই যেই এখানে আসতে চায় - তাকে এমন কাউকে গাইড হিসেবে বেছে নিতে হয়, যে যোন সম্পর্কে অনেক কিছু জানে।
- আর সেরকম একজন অভিজ্ঞ গাইড হল স্টকার।
- স্টকার অনেকদিন আগে থেকেই এই কাজ করে আসছে। সে এর আগেও অনেককে যোনে নিয়ে গেছে। তাই যদি কেউ যোনে আসতে চায়, তাহলে সবাই স্টকারের ঠিকানাই খুজে বেরায়।
- এইবারও দুজন ব্যক্তি, যার মধ্যে একজন লেখক ও অন্যজন অধ্যাপক !- তারাও একবার যোনে যেতে চায়। তাই এরা দুজন স্টকারের সাথে কথা বলে।
- স্টকারের স্ত্রী কখনোই চায়না যে তার স্বামী এসব কাজ করুক। কারণ এই কাজে স্টকারের জীবনের ঝুকি রয়েছে।
- যদি যোনে যাওয়ার সময় কোনো আর্মি অফিসার তাকে দেখে নেয়, তাহলে তাকে সেখানেই মেরে ফেলবে। কারণ যোনে যাওয়াটা পুরোপুরিভাবে বেসরকারী কাজ।
- স্টকার সেই দুজন ব্যক্তি, - যার মধ্যে একজন লেখক ও অন্যজন অধ্যাপক! - তাদের সাথে একটি বারে দেখা করে।
- আর এরপর এরা তিনজন যোনের উদ্দেশ্য রওয়া হয়।
- স্টকার এদের দুজনকে আগেই সাবধান করে দেয় - যে যোনে যাওয়ার পথে যেকোনো সময়, - যেকোনো বিপদ আসতে পারে। তাই তাদেরকে সবসময়ই সাবধানে থাকতে হবে।
- স্টকারের কথায় দুজনেই সম্মতি জানায়। আর এরপর স্টকার এই দুজনকে নিয়ে যোনের রাস্তায় বেরিয়ে পরে।
- কিন্তু যখন এরা অল্প রাস্তা পার হয় - তখনই এদের ওপর আর্মির দল গুলি চালাতে শুরু করে। কারণ সরকার চায়না যে কেউই যোনে যাক! আর সেজন্যই সরকারি আর্মি অফিসাররা এখানে পাহারা দিতে থাকে।
- স্টকার দুজনের সাথে তার গাড়িতে কর পালিয়ে যায় । আর্মি তাদের কিছুই করতে পারে না। এদের ভাগ্য ভালো থাকায় এদের কোনো ক্ষতি হয়না।
- এরপর এরা তিনজন এমন একটি যায়গায় পৌঁছায় যেখান থেকে এদের পায়ে হেঁটে যেতে হবে।
- তার জন্য এদের এখান থেকেই গাড়ি ছাড়তে হবে।
- আর এরা তিনজন তাই করে। স্টকার এদের এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকে।
- এরা তিনজন হাটতে হাটতে এমন একটি জায়গায় পৌঁছায়, -যেখানে আগে রেলগাড়ি মেরামত করা হত।
- এখানে স্টকার একটি ওয়ার্ককার দেখতে পায়। আর সে এটার মধ্যে ফিউল ভরে এখান থেকে বেরোনোর ব্যবস্থা করে।
- এরপর এরা তিনজন সেই ওয়ার্ককার করে অনেকদুর পযর্ন্ত এগিয়ে যায়।
- এখানে আসার পর স্টকার সেই ওয়ারকারটা ছেড়ে দেয়।
- স্টকার এই দুজনকে এটা বলে যে - এর আগে একজন ছিল, যার নাম "পরকিপাইন ", সে আগে এখানে এই কাজ টাই করতো।
- সেও এখানে অনেককেই নিয়ে এসেছিল।
- কিন্তু পরকিপাইন এখন আর এই দুনিয়ায় নেই।
- আর স্টকার যা কিছু শিখেছে - তা সব কিছুই পরকিপাইন তাকে শিখিয়েছিল। আর তাই সে এখন এই কাজ করছে।
- এখানে যে অধ্যাপক থাকে, সে লেখকের কাছে পরকিপাইন সম্পর্কে বলতে শুরু করে। অধ্যাপক এটা বলে যে - পরকিপাইন আগে খুবই গরীব ছিল।
- সেও স্টকারের মতই ভালো গাইড ছিল । কিন্তু যখন সে তার ভাইকে যোনে নিয়ে আসে, তখন তার ভাইয়ের মৃত্যু হয়।
- আর পরকিপাইন যখন তার বাড়িতে ফিরে যায়, তখন সে হটাৎ করেই খুব ধনী হয়ে যায়! কিন্তু এর কিছুদিন পরেই পরকিপাইন সুইসাইড করে নেয়!
- এর কারণ কি ছিল, তা একমাত্র সেই বলতে পারতো।।
- স্টকার আসতে আসতে এদের যোনের ভেতরে নিয়ে আসে।
- এখানে যে অধ্যাপক থাকে, তার এখানে আসার কারণটা সম্পূর্ণ আলাদা ছিল। সে এখানে কোনো ইচ্ছে পূরণ করতে আসেনি!
- বরং সে এই জায়গাটাই নষ্ট করে দিতে চায় ।
- যাতে কেউ তাদের খারাপ ইচ্ছে গুলো পূরণ করতে না পারে।
- কিন্তু যখন অধ্যাপক এটা করতে চায়, তখন স্টকার তাকে বাধা দেয়।
- কিন্তু অধ্যাপক তার কোনো কথা শুনতে চায়না।
- অধ্যাপক এই পুরো যোনকে বম দিয়ে নষ্ট করে দিতে চায়।
- স্টকার তাকে বার বার না করতে থাকে! কিন্তু অধ্যাপক তার কোনো কথা শোনেনা।
- অধ্যাপকের সাথে লেখক নিজেও এই জায়গাটা নষ্ট করতে চায়।।
- কিন্তু স্টকার এদের না এটা করতে না করে।
- কারণ - এখন এই যোন ছাড়া, এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে মানুষ তার হারিয়ে যাওয়া আশাকে ফিরে পাবে।
- যখন এখানে কারোর ইচ্ছে পূরণ হয়, তখন সেটা স্টকারের কাছে সবচাইতে বড়ো পাওয়া হয়ে দাড়ায়।
- স্টকারের জীবনে কিছুই নেই! সে তার পরিবারের জন্য কিছুই করতে পারেনি...
- তাই সে এখানের মাধ্যমে অন্যকে খুসি করার চেষ্টা করে ।
- কিন্তু নিজের জন্য তার কিছুই চাইবার নেই...
-
- মানুষ যখনই তার আশা হারিয়ে ফেলে, তখনই সে এই জায়গার কথা মনে করে।
- আর স্টকারের কাছে এটাই তার দুনিয়া।
- স্টকারের কথা শুনে অধ্যাপক থেমে যায়।
- আর এরা তিনজন বাড়ি ফিরে আসে।
- বাড়িতে ফেরার পর স্টকারের শরীর একদম খারাপ হয়ে পরে। কারণ এই ঘটনায় তার মনে এক গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। যার আঘাত তার কাছে অসহনীয় ব্যথার সমান।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন