Anabelle Creation
bangla short stories |
অ্যানাবেল সিনেমার শুরুতে একটা ঘরের ভেতরে একজন লোককে দেখানো হয় যার নাম স্যামুয়েল। স্যামুয়েল এই ঘরে বিভিন্ন ধরনের পুতুল তৈরী করে। স্যামুয়েল এই ঘরে কাজ করতে থাকে। আর তখন সেই ঘরের বাইরে থেকে কারোর পায়ের আওয়াজ শোনা যায়।।
এবং কেউ একজন বাইরে থেকে একটা চিঠি ঘরের ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়। স্যামুয়েল যখন চিঠিটা তুলে দেখে তখন তাতে লেখা থাকে " FIND ME " এবং স্যামুয়েল সেখান থেকে বাইরে বেরিয়ে, অন্য একটি ঘরে চলে আসে.. . সেখানে আরও একটি কাগজের টুকরো মেঝেতে পরে থাকে, যাতে লেখা থাকে " CLOSER" আর ঠিক এরপরেই স্যামুয়েলের পেছন থেকে একটি বাচ্চা মেয়ে চলে আসে, এবং স্যামুয়েল তাকে ধরে ফেলে। আর এই মেয়েটির নাম হল অ্যানাবেল।
এবং এরপর সেখানে আরেকজন মহিলাকে দেখা যায়, যিনি হলেন অ্যানাবেলের মা এবং স্যামুয়েলের স্ত্রী।
পরের দিন স্যামুয়েল তার পুরো পরিবারের সাথে চার্চ থেকে বাড়িতে ফেরার সময় তাদের গাড়ি খারাপ হয়ে যায়।
গাড়ি ঠিক করার সময় একটি চাকার কিছু একটা খুলে গিয়ে দুরে রাস্তার মাঝখানে চলে আসে। আর সেই জিনিস টা অ্যানাবেল ধরতে চায়.. আর ঠিক তখনই একটা গাড়ি রাস্তার মাঝখানে এসে পরে,, এবং সেই গাড়িটির সাথে অ্যানাবেল ধাক্কা খেয়ে মারা যায়।
এরপর 12 বছর কেটে যায়। এবং স্যামুয়েলের বাড়িতে ছয়জন অনাথ মেয়ে ও একজন খ্রিষ্টান নান থাকতে আসে। এই ছয়টি মেয়ের মধ্য একটি মেয়ের নাম থাকে জ্যানিস। জ্যানিস ঠিক ভাবে চলতে পারে না কারণ তার পায়ে কিছু সমস্যা থাকে। জ্যানিস একটা রুম খুলতে চায় কিন্তু ঠিক তখনই স্যামুয়েল তাকে সেই রুমটি খুলতে না করে। স্যামুয়েল তাকে বলে এই রুমটি অনেক বছর ধরে বন্ধ.. আর এটিকে ভুলেও খোলার চেষ্টা করোনা। কারণ এই রুমটা অ্যানাবেলের। যে এখন আর এই দুনিয়ায় নেই।
পরদিন যখন সবাই বাইরে থাকে তখন জ্যানিস রুমে বসে বাইরে দেখতে থাকে... তখন জ্যানিস এর পেছনে একটি অদ্ভুত কিছু দেখা যায়। যখন জ্যানিস এটা বুঝতে পারে যে তার পেছন থেকে কেউ তাকে দেখছে তখন জ্যানিস পেছনে ঘুরে তাকায়.।। কিন্ত জ্যানিস যখন পেছনে দেখে তখন সেখানে কাউকেই দেখতে পায়না।
এরপর রাতে যখন সবাই শুয়ে পরে তখন জ্যানিসের ঘুম আসে না। তখন জ্যানিসের কাছে একটা কাগজের টুকরো আসে,যাতে লেখা থাকে " FIND ME"" এই গেমটা শেই গেম যেটা অ্যানাবেল তার বাবার সাথে খেলতো।
যখন জ্যানিস হেঁটে হেঁটে অ্যানাবেলের রুমের সামনে যায় তখন অ্যানাবেলের রুমের ভেতরে থেকে আরো একটি কাগজের টুকরো বাইরে আসে। আর সেই কাগজের টুকরোয় লেখা থাকে " IN HERE"..
এরপর সেই রুমের দরজা খুলে যায়। এবং জ্যানিস সেই রুমের ভেতরে যাওয়ায় পর সেখানে একটা খুন সুন্দর ডল হাউস থাকে। ডল হাউসের ভেতরে একটা চাবি থাকে। সেই চাবি দিয়ে জ্যানিস রুমের একটি আলমারি খোলে। জ্যানিস আলমারির ভেতরে একটা ডল দেখতে পায়। এবং এরপর জ্যানিস সেটা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু এরপর সেই আলমারি আবার নিজে নিজেই খুলে যায়। জ্যানিস আবার সেই আলমারি টা লক করে! কিন্তু সেই আলমারি বারবার খুলে যেতে থাকে। এবং জ্যানিসের মনে হয় যে আলমারি ভেতরের সেই পুতুল টা তার দিকেই তাকিয়ে আছে। এই কারণে জ্যানিস পুতুলটা একটা সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে দিয়ে জানালার দিকে যেতে থাকে। আর জ্যানিসের পেছনে পেছনে সাদা কাপড়ে ঢাকা সেই পুতুল টাও আসতে থাকে। যখন জ্যানিস সেই কাপড়ের দিকে দেখে তখন তার নীচে একটি মেয়ের আকৃতি বোঝা যায়। কিন্তু সেই কাপড়ের নিচে কেউ থাকেনা.. এতে জ্যানিস ভয় পেয়ে নিজের রুমে চলে আসে। পরদিন জ্যানিস এইসব কথা সেই সিস্টার বা নান কে বলে। কিন্তু সেই সিস্টার তার কথা বিশ্বাস করে না।
এরপর এরকম ঘটনা আবারও ঘটে। যখন দুজন মেয়ে চাদরের নিচে খেলছিল তখন তারা চাদরের বাইরে কাউকে হাঁটতে দেখে। তারা ভাবে যে হয়তো স্যামুয়েলের স্ত্রী তাদের দেখছে। কিন্তু এরপর এক ভয়ানক মুখ তাদের চাদরের ভেতরে চলে আসে। এতে সেই দুজন মেয়ে খুব ভয় পেয়ে যায় এবং চিৎকার করে ওঠে।
তাদের চিৎকারে সবার ঘুম ভেঙ্গে যায় এবং সেই সিস্টার ও স্যামুয়েল এখানে চলে আসে। তখন একটা মেয়ে বলে যে আপনার স্ত্রী এখানে ছিল। কিন্তু এতে স্যামুয়েল অবাক হয়ে যায় এবং বলে এটা অসম্ভব।
কারণ তার স্ত্রী অনেক বছর ধরে বিছানায় আছে। সে চলতে পারেন না।
স্যামুয়েলের কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে যায়। আর সেই মেয়ে দুটো এই ঘটনা টাকে তাদের মনের ভুল বলে মেনে নেয়।
পরদিন রাতে জ্যানিস একটা ছবি দেখতে পায় যেখানে অ্যানাবেল এবং সেই পুতুল টাকে দেখা যায়। এরপর হঠাৎ করেই জ্যানিস একটা মিউজিক শুনতে পায়। সে মিউজিক ফোলো করতে করতে অ্যানাবেলের রুমের সামনে দাড়ায়। এরপর জ্যানিস অ্যানাবেলের রুমের ভেতরে প্রবেশ করে। সেখানে সে মিউজিক টা অফ করে আর ঠিক তখনই সে অ্যানাবেল কে দেখতে পায় যে আজ থেকে 12 বছর আগে মারা গেছে । জ্যানিস তাকে হ্যালো বলে এবং অ্যানাবেল তাকে বলে যে জ্যানিস তাকে সাহায্য করতে পারবে কিনা!..
এতে জ্যানিস বলে সে কি চায়। এবং অ্যানাবেল তার দিকে ঘুরে তাকায়,, কিন্তু অ্যানাবেলের মুখটা দেখতে খুব ভয়ানক হয় যা দেখে জ্যানিস খুব ভয় পেয়ে যায়। এবং অ্যানাবেল জ্যানিসের ওপর হালমা করে তাকে ওপর থেকে নিচে ফেলে দেয়। এতে জ্যানিসের দুটো পা ভেঙ্গে যায়। এবং এখন থেকে তাকে Wheel Chair এ চলাফেরা করতে হবে।
এখানে জ্যানিস সেই সিস্টার কে সব বলে যে সে কিভাবে ওপর থেকে নিচে পরেছে। জ্যানিস সিস্টারকে অ্যানাবেলের আত্নার সম্পর্কে বলে। যার একটা নতুন শরীর চাই। এতে সিস্টার জ্যানিসকে বলে যে আত্না তাদেরই শিকার করে যারা মনের দিক থেকে খুব নরম বা ভীতু। কিন্তু জ্যানিস মনের দিকে থেকে খুব সাহসী এই কথা বলে সিস্টার জ্যানিসের মনে সাহস জোগায়।
এরপর রাতে জ্যানিসের বন্ধু লিন্ডা সেই একই রকম ভাবে ভয় পায়। অ্যানাবেলের সেই পুতুল টা তার দিকেই তাকিয়ে থাকে। এবং সেই রাতে লিন্ডা এসব ঘটনায় খুব ভয় পেয়ে যায়।
পরদিন সকালে জ্যানিসকে সিস্টার বাইরে নিয়ে আসেন। এবং সিস্টার সেখান থেকে চলে যায়।
এরপর হঠাৎ কেউ জ্যানিসের উইল চেয়ার টাকে ধাক্কা দিয়ে সেই ঘরের ভেতরে নিয়ে যায় যেখানে অনেক বছর আগে স্যামুয়েল পুতুল বানানোর কাজ করতো।
এখানে জ্যানিস অ্যানাবেলের আত্মাকে দেখে খুব ভয়ে চিৎকার করে.. কিন্তু এরপর অ্যানাবেলের ভুত জ্যানিসের শরীরে প্রবেশ করে ফেলে।
জ্যানিসের চিৎকারে অনেকে এখানে চলে আসে। কিন্তু এসে দেখে জ্যানিস এখানে একদম ঠিক আছে। কিন্তু এটা আসলে অ্যানাবেলের আত্মা যে জ্যানিসের শরীরে প্রবেশ করেছে।
এরপর লিন্ডা স্যামুয়েল কে সেই পুতুল এবং অ্যানাবেল সম্পর্কে সব কিছু বলে যা তারা দেখেছে। স্যামুয়েল তার কথায় একটা রুমে যায় এবং সেখানে সেই পুতুল টাকে দেখতে পায়। এরপর সে জ্যানিসকে সেখানে দেখে যে একটা শয়তানের রুপ নিয়েছে। এবং সেই শয়তান স্যামুয়েলকে মেরে ফেলে।
এরপর লিন্ডা জ্যানিসের ঘর থেকে সেই পুতুল টা নিয়ে একটা কুয়োর ভেতরে ফেলে দেয়। এখানে সেই কুয়োর ভেতরে থেকে দুটো হাত লিন্ডাকে নিচে টেনে নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ঠিক তখনই সেই সিস্টার এসে লিন্ডাকে বাঁচিয়ে নেয়।
এরপর লিন্ডা ও সিস্টার মিসেস স্যামুয়েল এর কাছে জানতে চায় যে এসব কি হচ্ছে এবং কেনই বা হচ্ছে।
তখন মিসেস স্যামুয়েল বলেন যে আজ থেকে 12 বছর আগে যখন অ্যানাবেল মারা যায় তখন তাকে ফিরে পেতে তারা সেই শক্তিকে আহ্বান করেন যে শক্তি তাদের মেয়েকে ফিরিয়ে দিতে পারবে। কিন্তু তাদের আহ্বানে তাদের মেয়ের আত্মার জায়গায় অন্য কোনো খারাপ শক্তি তাদের মেয়ের পুতুলের ভেতরে চলে আসে। এটা স্যামুয়েল ও তার স্ত্রী তখন না জানতে পারলেও পরে তারা বুঝতে পারে। যখন স্যামুয়েলের স্ত্রী সেই খারাপ শক্তির আসল রুপ টা দেখে তখন সে সেই শক্তিকে থামাতে চেষ্টা করে এবং সেই শক্তি স্যামুয়েলের স্ত্রীর ওপর হামলা করে। এতে তার একটা চোখ নষ্ট হয়ে যায় ও সে পঙ্গু হয়ে যায়।
এরপর তারা দুজনে একজন পাদরির সাহায্য ও বাইবেল এর কিছু পৃষ্ঠার সাহায্য সেই পুতুল টাকে অ্যানাবেলের রুমে একটা আলমারিতে আটকে দেয়।
কিন্তু সেই আলমারি যখন জ্যানিস খুলে দেয় তখন সেই খারাপ শক্তি মুক্ত হয়ে যায়। এবং এখন এসব ঘটাতে থাকে।
অন্যদিকে জ্যানিসের ঘরে কয়েকজন মেয়েকে দেখা যায় যাদের ওপর জ্যানিস হামলা করে। এবং তারা সেখান থেকে বেরিয়ে আসে। সিস্টার তাদের সেখান থেকে বাইরে যেতে বলে এবং পুলিশ কে খবর দিতে বলে। যখন তারা বাইরে বেরোয় তখন তারা দেখে যে সেই খারাপ শক্তি স্যামুয়েলের স্ত্রীকে খুন করেছে।
এবং তারা এই দেখে বাইরে গিয়ে একটা গাড়িতে বসে পরে।
অন্যদিকে জ্যানিসের ঘরে সেই সিস্টার যায় এবং এখানে দেখে লিন্ডা ও তার সাথে আরও একটি মেয়ে আটকে আছে। সিস্টার তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সেই খারাপ শক্তি জ্যানিসের শরীর থেকে সিস্টার কে আঘাত করে।
এবং সেই শক্তি লিন্ডাকে মারার চেষ্টা করে আর ঠিক তখনই সিস্টার এসে লিন্ডাকে বাঁচিয়ে নেয়। এবং জ্যানিস আর সেই পুতুল টাকে আলমারি ভেতরে আটকে দেয়।
এরপর সবাই ঘরের বাইরে চলে আসে এবং এরপর ঘরের সমস্ত আলো নিভে যায়।
কিছুক্ষণ পরে এখানে পুলিশ আসে কিন্তু তারা জ্যানিসকে খুজে পায়না। কারণ সে আলমারির ভেতরে থেকে পালিয়ে গেছে।
পরদিন একজন পাদরি এসে সেই পুতুল কে তার সাথে করে নিয়ে যায়। এবং এরপর সেই সিস্টার ও বাকি সব মেয়ে এখান থেকে চলে যায়।
এরপর আমরা জ্যানিসকে দেখতে পাই যেখানে এক দম্পতি তাকে পালন করতে নিয়ে যেতে এসেছে। এবং এরপর জ্যানিসের শরীরের ভেতরের সেই আত্মা তাদেরকেও মেরে ফেলে।
এবং এভাবেই এই গল্প এখানেই শেষ হয়ে যায়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন